সমাচার ডেস্ক: বিভিন্ন গ্রামে দলে দলে পাহারা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে খুলনার দাকোপ উপজেলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত খুলনায় দাকোপ উপজেলার গ্রামে গ্রামে রাত জেগে পাহারা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা লাঠি, বাঁশি ও টর্চলাইট নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতভর ধর্মীয় উপাসনালয়, বাড়িঘর ও সড়কে পাহারা দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা, এবং যুব ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার অন্তত ১১টি হিন্দুবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার হিন্দুবাড়িগুলোর লোকজন বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে একটি শ্রেণি এমন হামলা ও সহিংস কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এসব প্রতিহত করতে স্থানীয় লোকজন দলে দলে ভাগ হয়ে গতকাল রাতে বিভিন্ন গ্রাম পাহারা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দাকোপের বাণীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পশ্চিম খেজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদেব কুমার রায় এবং পূর্ব খেজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব মণ্ডলের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। আর যেন কেউ হামলা করতে না পারে, সে জন্য এসব এলাকায় গতকাল রাতে দল বেঁধে পাহারা দিয়েছেন কয়েক শ মানুষ। তাঁদের একজন বলেন, সবাই সবার জায়গা থেকে মন্দির, স্থাপনা ও জানমাল রক্ষায় চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের কোনো সহায়তা এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে না।
সুতারখালী গ্রামের এক যুবক বলেন, ‘মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমরা বিভিন্ন এলাকার খবর নিচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছি। এখন দাকোপের নয়টি উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই স্থানীয় যুবক-তরুণেরা রাতে পাহারা দিচ্ছেন। যত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হচ্ছে, তত দিন পাহারা কার্যক্রম চলবে।এর আগে গত রোববার রাতে কৈলাসগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মিহির মণ্ডলের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। গ্রামটির একজন বাসিন্দা বলেন, গত দু–তিন দিনে এলাকা থেকে গরু নিয়ে গেছে একদল। রাতে মাছ লুটপাট হয়েছে। চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গতকাল রাতে ৩০০ লোক গ্রাম পাহারা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা যুব ঐক্য পরিষদের এক সংগঠক বলেন, বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। আতঙ্কের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দিন কাটাচ্ছেন। নিজেদের সুরক্ষায় তাঁরা গ্রামে গ্রামে পাহারা দিচ্ছেন।