টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নে ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ইসমাইল হোসেন বিরুদ্ধে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা তাকে জায়গা দখলমুক্ত করার অনুরোধ জানালে তিনি উল্টো হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। জমি পুনরুদ্ধারের আবেদন জানিয়ে উপজেলা অফিসার শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময় ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যমুনা নদীর ডুরিয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়। যুমনা নদীর ভাঙনের ফলে ডুরিয়া গ্রাম বিলীন হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গোহারিয়াবাড়ী ইউনিয়নের ভল্লভবাড়ী মৌজায় নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হয়। গোহারিয়াবাড়ী ইউনিয়নের ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৯৭২ সালে আব্দুস সোবহান সরকার, মোকাদ্দেস সরকার ও মুকবুল প্রধান পর্যায়ক্রমে মোট ৫০শতাংশ জমি দান করেন। পরবর্তীতে ওই ভূমিতে স্কুলের অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এরপর থেকে বিদ্যালয় সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ইসমাইল হোসেন বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছেন এবং বিদ্যালয়ের পূর্ব অংশে প্রায় ১ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেন। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা তাকে উক্ত জায়গা দখলমুক্ত করার অনুরোধ জানালে তিনি উল্টো হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বিদ্যালয় ব্যবহৃত জায়গায় রাতের আধারে সীমানা প্রাচীর দিয়ে কিছু অংশঅবৈধভাবে নিজ দখলে নিয়ে নেন। এতে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায়। বিপাকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। জায়গাটি পুনরুদ্ধারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা অফিসার শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানালেও এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের জায়গা দখলমুক্ত করার কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
উপজেলা অফিসার শিক্ষা কর্মকর্তা কুরসুম সোলায়মান বলেন, এই বিষয়ে তিনি অবগত নন। এটিও এর সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা নিবেন।
২০২৪ আগষ্টের পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি না থাকায় বর্তমানে উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর সাইফুল ইসলাম এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।
এ ব্যাপারে এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাকে জানিয়েছে। ইসমাইল হোসেন স্কুলের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। আমরা এই বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি অভিযোগ দিব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান শিকদার বলেন, আমরা দখলকৃত জমি ফেরত চাই। ইতিমধ্যে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বলেন, স্কুল জায়গায় কোনো দেওয়াল নির্মাণ করিনি। যেখানে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে সেটি একান্তই আমার জায়গা। স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সরকার যদি কোনোভাবে প্রামাণ করতে পারেন এ জায়গার মালিক আমি না, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমি দখল ছেড়ে দেবো।
এ প্রসঙ্গে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।