টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ধীরে ধীরে বেপরোয়া হয়ে উঠছিল মাটি ব্যবসায়ীরা। নদী কিংবা ক্ষেত-খামার যেখানে সুযোগ পেয়েছে সেখানে বসিয়েছে তাদের কালো থাবা। মাটি খেকোদের কালো থাবায় উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের কইটোলা কালিমন্দিরও রক্ষা পায়নি। মন্দিরকে শতভাগ ঝুঁকিতে ফেলে তার দু’পাশ থেকে গভীর করে মাটি সরিয়ে নিয়েছে তারা। প্রাচীন এ মন্দিরটির অবস্থান এক সময়ের খরস্রোতা লৌহজং ও এলেংজানী নদীর মিলনস্থল বড়মৈস্টা গ্রামে।

এর দক্ষিন পাশ দিয়ে এলেংজানী, পূর্ব-উত্তর পাশ দিয়ে লৌহজং প্রবাহীত। মন্দির ঘেষা পূর্ব উত্তর পাশ থেকে ২ মাসেরও অধিক সময় কাল ধরে অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে ডুবাইল ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আলম দেওয়ান সাদেক ও সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র ভৌমিকের নেতৃত্বে একটি চক্র। এ চক্রের সঙ্গে আওয়ামী যুবলীগেরও কয়েকজন রয়েছেন। চক্রটি এতই শক্তিশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউই লিখিত অভিযোগ করতে সাহস করেনি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বয়ং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোমবার ওই স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা তাদের সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে যায়। সেখানে ফেলে যাওয়া মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) অকেজো করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্দির কমিটির কয়েকজন সদস্য বলেন, ইউএনও’র হস্তক্ষেপে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পরা কইটোলা কালিমন্দির আপাতত রক্ষা পেলো। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডুবাইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলম দেওয়ান সাদেক জড়িত থাকার কথা অশ্বীকার করেন। কিন্তু এর আগে প্রশাসন মাটি সহ ৩টি ট্রাক আটক করে থানায় নিয়ে আসলে তা ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তদবির করেন দেওয়ান সাদেক। ওই সময় তার মধ্যস্থতায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে তিনি ট্রাক ৩টি ছাড়িয়ে নেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, উপজেলা ব্যাপি মাটি কাটার যেন ধুম পরে গেছে। অভিযান পরিচালনা করে নদী ও ফসলী জমির মাটি রক্ষায় সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। দিনে বন্ধ করলেও রাতে আবার মাটি কাটা শুরু হয়। আমরা রাতেও অভিযান অব্যহত রাখবো। সোমবার ডুবাইল ইউনিয়নের কইটোলা নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা কালে জড়িতরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে তাদের রেখে যাওয়া একটি ভেকু অকেজো করা হয়েছে। দেওলী ও এলাসিন ইউনিয়নে ধলেশ্বরী নদীতে বসানো ২টি ড্রেজার ধ্বংস করা হয়েছে। অবৈধভাবে মাটি কাটা ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত থাকবে।