টাঙ্গাইলের সখীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ‘ব্রি ধান—১০৩’ জাতের ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার মুচারিয়া পাথর ব্লকে এ মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়।
আমন মৌসুমে স্থাপিত এসপিডিপি প্লটে চাষকৃত ব্রি ফলিত গবেষণা বিভাগ গাজীপুর, আয়োজিত ফসল কর্তন ও মাঠ দিবসে ওই এলাকার কৃষক ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য দেন সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হুমায়ুন কবির, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সাঈদ হোসেন, উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইলিয়াস আহমেদ, উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালেহ আকরাম, রুবেল হোসাইন ও শামসুজ্জামান প্রমুখ। এ সময় ১০০ কৃষক কৃষাণি ফসল কর্তন ও মাঠ দিবসে অংশগ্রহণ করেন।
উপজেলার মুচারিয়া পাথর গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, স্থানীয় আমনে বিঘায় ৪/৫ মণ ফলন পেতাম। সময় লাগত ১৮০ দিন। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমানের উফশীসহ অন্যান্য জাত করেছি। সেখানে বিঘায় ১৮/২০ মণ ফলন পেয়েছিলাম । কিন্তু এ বছর ব্রি ধান১০৩ চাষ করে বিঘায় ২২ মণ ধান পেয়েছি। সময় লেগেছে ১৩০ দিন। এ ধানের পোকার আক্রমণ হয়নি। সেচ খরচ লাগেনি।ফলনও ২ মণবেশি পেয়েছি। কম খরচে বেশি ধান পেয়ে লাভবান হয়েছি। এ ধান কেটে জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল করতে পারছি। আমি আগামীতে এ ধান করব। বীজ পেলে আমরা প্রতিবেশীরাও এ ধান চাষাবাদ করবে বলে জানিয়েছেন।
উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুবেল হোসাইন বলেন, আমার ব্লকে ব্রি ধান১০৩ এর ১টি প্রদর্শনী প্লট করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্লটটিতে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক লাভজনক এ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ব্রি বীজ দিলে আগামী বছর আমরা এ ধানের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে পারব। এতে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে পরিবর্তিত জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করে ধানের ফলন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ধানের চাহিদা মেটানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া কৃষি জমির পরিমাণ, জমির উর্বরতা, ভূগর্ভস্থ পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ধান উৎপাদনে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল আধুনিক জাত ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং স¤প্রসারণের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো তথা খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি আরো বলেন, কৃষক পর্যায়ে নতুন এ জাতটি ব্যাপকভাবে স¤প্রসারণের মাধ্যমে ‘ব্রি ধান১০৩থ আবাদ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।