টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে ১১ সাংবাদিক জাল সনদপত্র দিয়ে সদস্যপদ লাভের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর জেলা জুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। জাতির বিবেকদের সংগঠন এ প্রেসক্লাবে জালসনদ দিয়ে কিভাবে তারা সদস্যপদ পেয়েছে তা নিয়ে চলছে মুখরোচক আলোচনা। জন্ম দিয়েছে নানান প্রশ্নের। এ ঘটনায় জেলার সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গঠনতন্ত্রের বেশকিছু গুরুত্বপুর্ন ধারা সংশোধন করা হয়। সভায় আলোচনা পর্বে প্রেসক্লাবের জেষ্ঠ সদস্য ও সাবেক সভাপতি এডভোকেট খান মোহাম্মদ খালেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেকে জাল সার্টিফিকেটে সদস্য হয়েছেন। এর চাইতে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারেনা। জাল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে যারা সদস্য হয়েছেন তারা নিজের নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েছেন। প্রেসক্লাবকে ভুল বুঝিয়ে জাল সনদ দিয়ে সদস্যপদ নিয়েছেন যারা, তারা আগামী সাতদিনের মধ্যে সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করবেন। তা না হলে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাল সনদের বিষয়টি এভাবে ফাঁস হয়ে গেলে সভায় উপস্থিত সাধারন সদস্যদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্তমান কার্যকরী কমিটি এতবড় একটি বিষয় দীর্ঘদিন ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল কেন তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে এই ১১ জনকে সদস্যপদ দেয়া হয়েছে কিনা তা নিয়েও শুরু হয় গুঞ্জন। অনেকের অভিযোগ, প্রেসক্লাবের নির্বাচনে একটি পক্ষ নিজেদের ভোট ব্যাংক তৈরির উদ্দেশ্যে তাদের বাহামভুক্তদের জাল সনদের মাধ্যমে সদস্যপদ দেয়া হয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রেসক্লাবের বর্তমান কার্যকরী কমিটির গুরুত্বপুর্ন পদে থাকা একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আমরা কোনভাবেই জালসনদধারীদের পক্ষে অবস্থান নিতে পারিনা।
আমরা জানতে পেরেছি অন্তত ১১ জন সাংবাদিক জাল সনদের মাধ্যমে সদস্যপদ লাভ করেছে। তাদের এই অপকর্মের দায় সাংবাদিক সমাজ নিতে পারেনা। প্রেসক্লাবের কোন সদস্য এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে সকল প্রকার সহযোগীতা করবো। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তারা। এদিকে সদস্যপদ থেকে পদত্যাগের সাতদিনের আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর যারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।