অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়নে গঠিত কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ১০-১৫ বছরে আমলারা ব্যবসায়ী আর ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদ হয়ে গেছেন। রাজনীতিবিদরাও ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা সবাই নিজেদের কাজ থেকে বের হয়ে গেছেন।শনিবার অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়নবিষয়ক জনশুনানিতে এসব কথা বলেন তিনি। নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় এই জনশুনানি হয়।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘পুরোনো সিন্ডিকেট বদলে নতুন সিন্ডিকেট হচ্ছে। রাজনীতির বদল হলো না, বাজারও বদল করলাম না। এক অত্যাচারীর পরিবর্তে আরেক অত্যাচারী। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। সামগ্রিকভাবে নাগরিক অধিকার আমাদের নিজেদেরই উসুল করে নিতে হবে। এখন এটাই বড় সুযোগ।’বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘রাষ্ট্রে যাদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার কথা, তারাও দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছেন।
এতে বোঝা যায়, আমরা যে সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার ব্যাপ্তি কত ব্যাপক ও গভীর।’জনশুনানিতে যথাযথ নাগরিক সেবা না পাওয়া, প্রকল্পে অতি মূল্যায়ন, ব্যাংক লুটপাট, যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না করা, আদিবাসীদের মূল্যায়ন না করা, উন্নয়ন প্রকল্পে জনগণকে সম্পৃক্ত না করা, প্রকল্পের নামে লুটপাট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। অংশীজন হিসেবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক মানুষ এতে তাদের সমস্যা ও পরামর্শ তুলে ধরেন।
শুনানিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, ফেরদৌস আরা বেগম, ড. ইমরান মতিন, ড. কাজী ইকবাল, ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ড. সেলিম রায়হান ও শরমিন্দ নীলোর্মি উপস্থিত ছিলেন।অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান শুনানিতে বলেন, ‘দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এভাবে বেশিদিন চলতে পারে না। এখনই ঠিক করা উচিত। ছোট ছোট পরিবর্তন না হলে বড় পরিবর্তন আসবে না।’অংশগ্রহণকারী মো. রিদোয়ান বলেন, ‘বেশির ভাগ দুর্নীতি হয় মন্ত্রী-এমপির মাধ্যমে। অযোগ্যদের চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হয়।’সিনিয়র ডক্টরস ক্লাবের কর্মকর্তা এ কিউ এম অহিদুল আলম বলেন, ‘বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হলো। কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি।
’এতে আরও বক্তব্য দেন হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ফাল্গুনী হিজড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক জোবায়ের আলম, নদী বিশেষজ্ঞ ড. ইদ্রিস আলী, রাজনীতিবিদ হাসান মারুফ রুমি প্রমুখ।