সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার(২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে হঠাৎ কয়েক সেকেন্ডের জন্য কম্পন টের পান জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। হঠাৎ কাঁপুনিতে ঘরবাড়ি, দোতলা ও বহুতল ভবন ও দোকানপাট থেকে অনেকেই দ্রুত বাইরে বের হয়ে আসেন। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাময়িক আতঙ্ক তৈরি হয়। জেলাবাসী উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, ভূকম্পনের সময় অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ২৭ সেকেন্ডের দুলুনিতে ভবনে বাস করা অনেকেই উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছিলেন। ঘরের আসবাব-থালা-বাটি পড়ে যাচ্ছিল। অগুনসহ চুলা কেঁপে উঠায় অনেক গৃহিনী ভেবেছেন এই বুঝি ভবনটি ভেঙে পড়ছে। কম্পনের ফলে অনেকেই দ্রুত রাস্তায় নেমে আসে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে দেশের অন্যান্য জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার খবর জানতে পেরে তারা বুঝতে পারেন এটি ভূমিকম্পই ছিল। ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে টাঙ্গাইল জেলায় বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও ঝুলন্ত তার দুলতে দেখা গেছে বলে জানান স্থানীয়রা। জেলার বেশ কিছু এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্কে সাময়িক সমস্যা দেখা দেয়, ফলে অনেকে মুহূর্তকাল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
টাঙ্গাইল শহরের আকুরটাকুরপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, আজমি খন্দকার, নাজমুল ইসলাম, আমজাদ সিদ্দিকী সহ অনেকেই জানান, হঠাৎ মনে হলো ঘরটা কাঁপছে। কয়েক সেকেন্ডের মতো স্থায়ী ছিল। তারা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসেন। ভূমিকম্পের পর সচেতনতা বাড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জরুরি বার্তা ছড়িয়ে দেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তারা সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে ভবনের সিঁড়ি ব্যবহার, উন্মুক্ত স্থানে অবস্থান এবং জরুরি বহির্গমন পথ প্রস্তুত রাখার আহ্বান জানান। হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই ভূকম্পনে বড় কোনো ক্ষতি না হলেও স্থানীয়দের মধ্যে সতর্কতা ও উদ্বেগ রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভবিষ্যতে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় ভূমিকম্প-সহনীয় ভবন নির্মাণ ও দুর্যোগে পূর্বপ্রস্তুতি নিশ্চিত করা জরুরি।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ জালাল উদ্দিন বলেন, ‘টাঙ্গাইল স্টেশনে ভূকম্পন মাপার যন্ত্র নেই। রাজধানীর কাছের জেলা হওয়ায় সেখান থেকেই ভূকম্পন মাপা হয়। শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে টাঙ্গাইলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূকম্পনের স্থায়িত্বকাল ছিল ২৭ সেকেন্ড। নিকট অতীতকালের মধ্যে এটি বৃহৎ ভূকম্পন ছিল।’
টাঙ্গাইললের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, ‘ভূমিকম্প অনুভূতের পর পরই দ্রুত মাঠপর্যায়ে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি যাচাই করা হচ্ছে। জেলায় এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, টাঙ্গাইল নিরাপদ রয়েছে।’











