অবশেষে শেষ হলো অপেক্ষার প্রহর। শুরু হলো সমুদ্র বিধৌত জনপদ কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চালু হলো বহুল প্রতীক্ষার কক্সবাজার-দোহাজারী রেল পথ। কক্সবাজারে ঝিনুক আকৃতির আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তব্য রাখার পর প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার থেকে রামু যাবেন।
উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, বিভিন্ন সংসদীয় আসনের সদস্যরা এবং রেলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা। এর আগে রেলপথ মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ঢাকা থেকে ট্রেনে করে আসা যাবে কক্সবাজার। রেলওয়ে স্টেশনটি সাজানো হয়েছে আইকনিক ঝিনুক আকৃতিতে। যাত্রী ও পর্যটকরা এখানে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এই রুটের সর্বনিম্ন ভাড়া মেইল ট্রেনে ১৮৮ টাকা আর আন্তঃনগর এসি বার্থে সর্বোচ্চ ভাড়া ১ হাজার ৭২৫ টাকা।
এ রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোনও রেল যোগাযোগ ছিল না। শুরুতে এটি ছিল দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে মোট ১২৯ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের কথা ছিল। পরে রামু থেকে ঘুমধুম অংশের কাজ স্থগিত করা হয়। এখন চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। যাতে কিলোমিটার প্রতি খরচ হচ্ছে প্রায় ১৮৩ কোটি টাকা। আর এর মধ্যে শুধু কক্সবাজারে স্টেশনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২১৫ কোটি টাকা। পুরো প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।