আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির নেতা কে হবেন এবং (তারা যদি জেতে) প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, এমন প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চায় অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যেভাবেই হোক নির্বাচন হবেই।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাওলায় সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উদ্বোধন উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ একমাত্র নৌকা মার্কাই পারে। তাই আপনাদের কাছে আমার এটাই আবেদন থাকবে আগামী নির্বাচন। আমি জানি বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, তারা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগে। খুব স্বাভাবিক, তারা যে নির্বাচন করবে তাদের নেতাটা কে? তারা যে নির্বাচন করবে, তাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবে? ওই দুর্নীতিবাজ পলাতক আসামি নাকি এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী? তিনি নাকি যায় যায়, আরেকটা পলাতক, তাহলে কে করবে? এজন্য তাদের একটাই চিন্তা, তা হচ্ছে নির্বাচন বানচাল করা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচন হলেই তারা জানে নৌকা মার্কা ভোট পাবে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে, দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে, তাই তারা নির্বাচনকে নষ্ট করতে চায়। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। এটা যেন করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে ঢাকাবাসী, আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। যেভাবে হোক নির্বাচন এদেশে হবেই এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। আমার একটাই কথা, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। ভোট দিলে আছি, ভোট না দিলে নেই। কিন্তু দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। নৌকা মার্কায় ভোট দিতে সবাইকে ওয়াদা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও যেন আমরা আপনাদের সেবা করতে পারি। আপানারা আমাদের কথাটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন যে, উন্নয়ন চাইলে নৌকা মার্কা। নৌকা মার্কায় ভোট দেন, আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আপনারা কি দেবেন নৌকা মার্কায় ভোট সবাই। শুধু নিজে দিলে হবে না, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সবার কাছে প্রচার করতে হবে। প্রচার করতে হবে যে দেশের উন্নয়নে একমাত্র আওয়ামী লীগই আছে। আওয়ামী লীগই দেশে উন্নয়ন করতে পারে, গণতন্ত্র দিতে পারে। যারা বিদেশে এখানে সেখানে ধরনা দেয়, ওই সব কোনো কাজে লাগবে না। জনগণের শক্তি বড় শক্তি। আর আমি জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি, জনগণের উপরই আমার আস্থা। ১৫ আগস্ট মা, বাবা সবাইকে হারিয়েছি। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার, আমার আপনজন। কাজেই তাদের জন্য কাজ করা এটা আমার দায়িত্ব কর্তব্য হিসেবেই আমি দেখি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন আপনাদের কাছে অনুরোধ, প্রত্যেকের এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে, সবাই উৎপাদন করেন। বিশ্বব্যাপী খাদ্য মন্দা, বাংলাদেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয়। আর অনেকে, অনেক সময় আমি দেখি কোনো জিনিসের তারা হোল্ডিং করেন, মজুদ করেন। এই মজুতদারি কালোবাজারি যারা তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কে কোথায় কি মজুত রেখে পেঁয়াজ পচাবে, ডিম পচাবে আর মানুষকে বেশি দামে কিনতে হবে এটা চলবে না। ওই হোল্ডিং যারা করেন তাদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমরা নেব। যথাযথ সাজার ব্যবস্থা করা হবে যাতে মানুষের কোনো কষ্ট না হয়।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীরর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আতিক প্রমুখ।