দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ধর্ষণের হার বেড়েছে ৬৮.৪৫ শতাংশ। একই সময়ে শিশুদের ওপর সহিংসতা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব বৃদ্ধি এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বল ভূমিকার কারণে সহিংসতা থামছে না। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৯২ জন নারী ও শিশু। গত বছরের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ২৯২ জন, যা থেকে বোঝা যায় ধর্ষণের হার বেড়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ।
শিশুদের প্রতি সহিংসতার চিত্রও উদ্বেগজনক। গত বছরের জানুয়ারি-জুলাই সময়ে সহিংসতার শিকার হয় ৪৬৩ শিশু। এ বছর একই সময়ে সহিংসতার শিকার হয়েছে ৬৪০ শিশু, যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪০৫ নারী ও শিশু। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১৭ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৫ জনকে এবং ৫ জন আত্মহত্যা করেছেন।
আরেকটি মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) তথ্য অনুযায়ী, এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫০২ জন, যার মধ্যে ১৩৩ জন সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার এবং ২৭ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, দেশের পুলিশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের পর নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে নেতিবাচক বয়ান তৈরি হয়েছে, যা অপরাধীদের উৎসাহিত করছে।”