আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ি) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী লে. কর্নেল (অব.) মো. আসাদুল ইসলাম আজাদকে ঘিরে একের পর এক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিস্ময়কর বিষয় হলো, এসব ষড়যন্ত্র আসছে তার নিজের দলের ভেতরের কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী মনোনয়নপ্রত্যাশীর কাছ থেকে।
জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় এগিয়ে থাকা একজন নিষ্ঠাবান নেতাকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করার জন্য এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কর্নেল আজাদকে নিয়ে প্রতিপক্ষের প্রথম অপপ্রচার শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যে কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মসূচি পালন করলেই তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফ্যাসিবাদের দোসর” আখ্যা দেওয়া হয়। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আজাদের নেতৃত্বে যখন বিজয় মিছিল হয়, তখন প্রতিপক্ষ মিছিল ভাঙার চেষ্টা করে।
আজাদের অনুসারীরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দিলেও পরবর্তীতে প্রতিপক্ষীয় সন্ত্রাসীরা তার অফিসে হামলা চালায় এবং ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলে। এই হামলার শিকার হয়েও আজাদ কর্মীদের শান্ত থাকতে নির্দেশ দেন, কারণ তার কাছে দলের স্বার্থই সবার আগে।
দ্বিতীয় অপপ্রচার ছড়ানো হয় ব্যবসায়িক জীবনের একটি পুরনো ঘটনা ঘিরে। সেনাবাহিনীতে চাকরি থেকে অবসরের পর কর্নেল আজাদ মিরপুর এলাকায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় ব্যবসায়িক প্রয়োজনে তিনি বৈধভাবে একজন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে জমি বিক্রি হলে চুক্তি অনুযায়ী মূলধনসহ বিনিয়োগকারীর হিসাবেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ সেই চুক্তিপত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল একটি স্বাভাবিক ব্যবসায়িক লেনদেন, যার মধ্যে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি ছিল না।
তৃতীয় অপপ্রচার চালানো হয় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার নাম ব্যবহার করে। সরকারবাড়ি নামক প্রকল্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কর্নেল আজাদ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সাবেক এমপিও উপস্থিত ছিলেন। পরে ইলিয়াস মোল্লার কর্মীরা প্রকল্পের ব্যানার সরিয়ে তাদের নির্বাচনী ব্যানার লাগায়।
আজাদ শুধু আনুষ্ঠানিকতার কারণে উপস্থিত থাকলেও প্রতিপক্ষ সেটিকে ব্যবহার করে প্রচার করছে যে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘনিষ্ঠ। অথচ সত্য হলো, আজাদ ছিলেন এবং আছেন বিএনপির একজন নিষ্ঠাবান কর্মী, যিনি কখনো অন্য দলের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রাখেননি। এমনকি আজাদ ওই অনুষ্ঠানে তার নিজের বক্তব্য তার নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন, যেখানে স্পষ্টই বুঝা যায় যে সেটি একটি প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছিল।
এসব অপপ্রচারের জবাবে কর্নেল আজাদের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, প্রতিপক্ষ তার জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়েই এসব করছে। আজাদ হচ্ছেন দলের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করার মানষিকতার একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান নেতা। তার বাবা মরহুম গোলাম মোস্তফা ছিলেন জাগদলের সক্রিয় সদস্য এবং গ্রাম সরকার প্রধান, ভাই আশরাফুল ইসলাম মাসুদ ইউনিয়ন বিএনপির দুইবারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। অর্থাৎ তার গোটা পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। চাকরি জীবনে লে: কর্নেল থেকে আর উপরে যাওয়া সম্ভব হয়নি শুধুমাত্র বিএনপি ফ্যামিলি হোয়ার কারণেই।
চাকরি জীবনে দক্ষতা ও সততার জন্য প্রশংসিত হলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ২০১৬ সালে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তারপরও তিনি ভেঙে পড়েননি, বরং দলের পতাকা উঁচু রাখার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। নিজের ব্যবসায়িক জীবনের সুবিধা অসুবিধা সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দলীয় রাজনীতিকে প্রাধান্য দিয়েছেন, নিজের স্বার্থকে নয়। এলাকায় শিক্ষা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, রাস্তাুঘাট উন্নয়ন, মসজিদ-মাদ্রাসা সংস্কার এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো অসংখ্য কাজ করেছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে সংগঠিত করেছেন, মাদকবিরোধী কর্মসূচি করেছেন, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছেন।
কর্নেল আজাদ নিজেই বলেন, আমাকে দল থেকে দুর্বল করার জন্য প্রতিপক্ষ মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু আমি এসব নিয়ে বিচলিত নই। আমি জীবনের সব ত্যাগ করেছি শুধু বিএনপির জন্য। ব্যক্তিগত ক্ষতি হলেও আমি চাই বিএনপি শক্তিশালী হোক। আমি দলের স্বার্থকে সবসময় নিজের স্বার্থের ঊর্ধ্বে রেখেছি, ভবিষ্যতেও রাখব। তিনি পদ-পদবীর লোভ দেখাননি; বরং সবসময় দলের সেবা করেছেন। কর্নেল আজাদ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার সংগ্রাম এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুসরণ করে রাজনীতি করেন।
প্রতিপক্ষের অপপ্রচার, মিথ্যা অভিযোগ বা সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো এসব তাকে থামাতে পারেনি। বরং তিনি দলের একতাকে শক্তিশালী করেছেন, জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের দেখানো পথ অনুসরণ করে দলের আদর্শকে রক্ষা করেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন, কর্নেল আজাদ হচ্ছেন দলের এক অমূল্য সম্পদ। প্রতিপক্ষের অপপ্রচার তার জনপ্রিয়তা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার নিষ্ঠা, সততা, ত্যাগ ও বিশ্বস্ততা প্রমাণ করছে যে তিনি দলের মনোনয়নের যোগ্য প্রার্থী। তিনিই মানুষের আস্থা, ১৯৮১ সালের পর এই প্রথম বিএনপি এই সিটটি উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন বলে দাবী করেন কর্নেল আজাদ। হাইকমান্ড যদি দলের জন্য নিবেদিত, হিংসা-বিদ্বেষমুক্ত একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে চান, তবে কর্নেল আজাদ একজন উপযুক্ত প্রার্থী।