অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে ইংল্যান্ড-ভারত টেস্ট সিরিজ শেষ হয়েছে ২-২ ড্রয়ে। নতুন ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের শুরুতেই পাঁচ ম্যাচের সিরিজে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে দুই দল। প্রতিটি ম্যাচ গড়িয়েছে পঞ্চম দিনে। চারটি ম্যাচ গিয়েছে শেষ সেশন পর্যন্ত। সিরিজ শুরুর আগে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা ভাবছিলেন, ইংল্যান্ড সহজ জয় পাবে। কারণ, সিরিজের আগে ভারত একেবারেই ছন্দে ছিল না। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে ০-৩ ব্যবধানে হারা, এরপর অস্ট্রেলিয়ায় ১-৩ ব্যবধানে সিরিজ হার—সব মিলিয়ে দল ছিল আত্মবিশ্বাসহীন। এর সঙ্গে যোগ হয় অবসর ও ইনজুরির কারণে রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও মোহাম্মদ শামির দলের বাইরে থাকা।
প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্বে নামা শুভমন গিলের অভিজ্ঞতা ছিল কম। তার বিদেশের মাটিতে ব্যাটিং গড়ও তেমন ভালো নয়। এছাড়া পেসার জাসপ্রিত বুমরাহর ফিটনেস নিয়েও শঙ্কা ছিল। প্রথম টেস্টে হেডিংলিতে ৩৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ইংল্যান্ডের জয়ে সমালোচকরা ঠিক প্রমাণিত হয়েছিলেন। কিন্তু এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে ৩৩৬ রানের বিশাল জয় দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। এরপর সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোতে দুই দলই সমানে লড়েছে। মাঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে দেখা গেছে দুর্দান্ত ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স।
সিরিজে তিন ভারতীয় ব্যাটার—গিল, লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাডেজা করেছেন ৫০০ রানের বেশি। ইংল্যান্ডের পক্ষে এই কৃতিত্ব কেবল জো রুটের। ভারত করেছে ১২ সেঞ্চুরি, যেখানে ইংল্যান্ডের ছিল ৯টি। বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন মোহাম্মদ সিরাজ। তিনি নেন ২৩ উইকেট। এক ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন কেবল আকাশ দীপ। সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন গিল ও সিরাজ। ব্র্যাডম্যানসুলভ ব্যাটিংয়ে গিল করেছেন ৭৫৪ রান। এক টেস্টেই তার সংগ্রহ ৪৩০। মাত্র ২০ রানে সুনীল গাভাস্কারের রেকর্ড ভাঙা হয়নি। অধিনায়ক হিসেবে সিরিজে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের তালিকায় আছেন ডন ব্র্যাডম্যানের পরেই। অন্যদিকে সিরাজ বুমরাহ-শামির অনুপস্থিতিতে পেস আক্রমণের নেতা হয়ে উঠেছেন। এজবাস্টনে তার ৬ উইকেট ভারতের জয়ে মূল ভূমিকা রাখে। ওভালে ৯ উইকেট নিয়ে ভারতকে সিরিজে সমতায় ফেরান।