পুরো টাঙ্গাইল জেলাজুড়ে মাদকের ভয়াল থাবা দিন দিন বিস্তার লাভ করছে। নদী, রেল ও সড়কপথ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত প্রবেশ করছে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। জেলার নাগরপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী ও টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চল এবং শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লী মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।
মাদক প্রবেশ ও বিস্তারের রুট জানা গেছে, সীমান্তবর্তী জেলা থেকে টাঙ্গাইলের প্রবেশদ্বার এলেঙ্গা হয়ে মাদক প্রবেশ করছে। এখান থেকে তা ঢাকা, গাজীপুর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী হয়ে নাগরপুরের দপ্তিয়র, চর সলিমাবাদ, শাহাজানি, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলি ও কাকুয়া,
ভূঞাপুরের নিকরাইল, গোবিন্দাসী ও কালিহাতীর চরাঞ্চল দিয়ে নিরাপদে মাদক পরিবহন করা হচ্ছে। পুলিশের অভিযান ও উদ্ধার টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ জানায়, গত সাত মাসে তারা উদ্ধার করেছে—গাঁজা: ২০৮ কেজি .ইয়াবা: ৫৭,২৬৫ পিস ,হেরোইন: ৭২৫.১০ গ্রাম, মদ: ১,০৮৫.৩৬ গ্রাম ,ফেনসিডিল: ৫৯৫ বোতল ,এসবের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। একই সময়ে ৪৭৩ জন মাদক কারবারির নামে ৩৩৮টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, তাদের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে— গাঁজা: ৩৮ কেজি, ইয়াবা: ৫,৭৭৪ পিস, হেরোইন: ৮৫.৫ গ্রাম, ফেনসিডিল ও টাপেন্টাডল ট্যাবলেট: ৩,৪৮৮ পিস ,ওয়াশ জাতীয় মাদক: ১০ হাজার লিটার
এতে আনুমানিক মূল্য দাঁড়ায় ৪৭ লক্ষ টাকা। এই সময়ে ১৯৭ জনের নামে ১৯৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। র্যাবের অভিযান র্যাব-১৪ (সিপিসি-৩) এর তথ্যমতে, সাত মাসে তারা উদ্ধার করেছে— গাঁজা: ৮২ কেজি ,ইয়াবা: ৪,৭৪৯ পিস ,হেরোইন: ১৬৭ গ্রাম
,মদ: ৯৮ লিটার ,ফেনসিডিল: ৪৩১ বোতল ,যার বাজারমূল্য প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা। পুলিশের অবস্থান টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, “মাদক নির্মূলে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
অভিভাবকদের সন্তানদের খেয়াল রাখতে হবে, ধর্মীয় উপাসনালয়ে মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করতে হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে।” সারসংক্ষেপ পুলিশ, র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানে কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হলেও কারবারিরা নতুন কৌশলে ফের মাদক ব্যবসা শুরু করছে। ফলে টাঙ্গাইল জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।