বিয়ের দাবিতে এক কিশোরী দুদিন ধরে প্রতিবেশেী আনোয়ার হোসেন রানা নামে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছিল। গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) প্রেমিকের এক চাচা মীমাংসার আশ্বাসে অনশন ভাঙিয়ে ওই কিশোরীকে তার জিম্মায় নেন। কিন্তু শনিবার বিকাল পর্যন্ত মীমাংসার দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখতে না পেয়ে এলাকাবাসী কিশোরীর বাড়ির সামনে রানাকে গাছে বেঁধে রাখেন।
পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী।ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের গাছাবাড়ী গ্রামে। আনোয়ার হোসেন রানা (৩১) গাছাবাড়ী গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুল মালেকের ছেলে।স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাস আগে পারিবারিক কলহের কারণে আনোয়ার হোসেন রানাকে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছেন। এরপর থেকে পাশের বাড়ির অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া দূরসম্পর্কের এক ভাতিজির সাথে সম্পর্ক গাঢ় হতে থাকে।
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই কিশোরী গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রানার বাড়িতে গিয়ে ওঠে। অবস্থা খারাপ বুঝে রানার এক চাচা আব্দুল বারেক শুক্রবার মীমাংসার দায়িত্ব নিয়ে ওই কিশোরীকে নিজের জিম্মায় নেন।শনিবার বিকাল পর্যন্ত তার কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়ায় বন থেকে গরুর বহর নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে রানাকে ওই কিশোরীর বাড়ির সামনে আটকে গরুর রশি দিয়ে গাছে বেঁধে রাখে এলাকাবাসী। এলাকার শত শত লোক এ দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান।
গাছে বাঁধা অবস্থায় রানা জানান, এই কিশোরীর বাড়িতে আসা-যাওয়ার অভিযোগে তার স্ত্রী তাকে সন্দেহ করত। এ কারণে নয় মাস আগে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। এদিকে এলাকাবাসীর খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে তাদের কাছে রানাকে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ রানা ও অভিভাবকসহ ওই কিশোরীকে থানায় নিয়ে যায়। মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৫ মে গাছাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী লিজাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত লিজা আনোয়ার হোসেন রানার স্বজন। আলোচিত লিজা ধর্ষণ ও হত্যার ওই ঘটনার মামলায় লিজার বাবা মিজানুর রহমানের সন্দেহজনক আসামির তালিকার প্রথম নামটি ছিল এই আনোয়ার হোসেন রানার। মামলার বাদী মিজানুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত লিজার ধর্ষণ ও হত্যার আসামি চিহ্নিত হয়নি। ডিএনএ টেস্টের নামে নিরাপরাধীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছে। দীর্ঘ সময় তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর পিবিআই সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় রানাসহ তিনজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করে আদালতে রিপোর্ট জমা দেয়।মিজানুর রহমান আরো জানান, তিনি নারাজি দিলে আদালত তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছে।