মধুপুর উপজেলা নতুন পরিচয়ে আলোচিত। এখানকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেন শুধু প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, বরং সাধারণ মানুষের প্রকৃত বন্ধু, প্রেরণার বাতিঘর এবং মানবিক উদারতার প্রতীক। ৩৫তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের এই কর্মকর্তা মেধা, সততা ও নিষ্ঠার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মধুপুরবাসীর আস্থা অর্জন করেছেন।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করা মো. জুবায়ের হোসেন শিক্ষাক্ষেত্রে অসাধারণ কর্মফল রেখে এসেছেন। ২০০৬ সালে তিনি জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি সম্পন্ন করেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক (২০১৪) ও স্নাতকোত্তর (২০১৬) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৪ বছর বয়সে অপচিকিৎসার কারণে বাম হাত হারানোর মতো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি নিজের মনোবল অটুট রেখেছেন।
প্রশাসনিক জীবন ও জনগণকে সেবা: ২০১৭ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রশাসনিক জীবনের সূচনা করেন। পরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন এবং ভূমি সেবায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন।
২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মধুপুরের ইউএনও হিসেবে যোগদান করার পর, তিনি আইনশৃঙ্খলা, সরকারি খাস জমি উদ্ধার, এবং সার্বিক প্রশাসনিক কার্যক্রমে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার উদ্যোগে মধুপুরে বন ও খাস জমি উদ্ধারসহ পরিবেশ রক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
শিক্ষা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ: মো. জুবায়ের হোসেন নিয়মিত সরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা পরিদর্শন করেন। শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়া রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়তা করেছেন। এছাড়া তিনি বাজার মনিটরিং করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন এবং ফুটপাত দখলমুক্তকরণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করেছেন।
উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড: রাস্তাঘাট সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ, হাটবাজারের উন্নয়ন এবং টিআর-কাবিখার স্বচ্ছ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি নজরদারি করছেন। মধুপুরের পাহাড়ি লাল মাটি ও টিলা কাটার অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করাও তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
মানবিক দিক ও জনপ্রিয়তা: সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে জনগণের সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। যারা সাহায্যের জন্য এসেছেন, তাদের হাসিমুখে গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ে সেবা নিশ্চিত করেন। তিনি নিজের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে মধুপুরবাসীর হৃদয়ে অমর স্থান করে নিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তার কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন। সংসার জীবনে দুই সন্তানের পিতা হলেও প্রশাসনিক দায়িত্বে কোনোভাবে অবহেলা করেননি। তার সততা, নিষ্ঠা ও উদার মনোভাব তাকে মধুপুরবাসীর জন্য আশার আলো ও প্রকৃত সেবক হিসেবে পরিচিত করেছে।