লেখক, গবেষক, বুদ্ধিজীবী ও বামপন্থি রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানকারী বদরুদ্দীন উমর মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতির সংগ্রামের এক উজ্জ্বল বাতিঘর ছিলেন।
ভাষা আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা, গবেষণা, ঔপনিবেশিক মানসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সমাজতান্ত্রিক দর্শনের প্রতি অবিচল নিষ্ঠা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে।” ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে ভূমিকা প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বদরুদ্দীন উমর গোড়ার দিক থেকেই ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারের পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি জুলাই আন্দোলনকে উপমহাদেশের এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
সংগ্রামী ও প্রগতিশীল চিন্তাবিদ জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে বদরুদ্দীন উমর শুধু একজন তাত্ত্বিক নন, তিনি ছিলেন আজীবন সংগ্রামী। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার সোচ্চার অবস্থান এবং সাহসী ভূমিকা প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
স্বাধীনতা পুরস্কারের মনোনয়ন জাতীয় পর্যায়ে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল। তবে ব্যক্তিগত নীতির কারণে তিনি সেই পুরস্কার গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। জাতির অপূরণীয় ক্ষতি প্রধান উপদেষ্টা তার শোকবার্তায় বলেন,
“বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যু জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিন্তাশীল মানুষের জন্য তার লেখনী ও জীবনদর্শন অনন্য পথনির্দেশ হিসেবে কাজ করবে।” তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বদরুদ্দীন উমর। রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৪ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।