সমাচার ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে বিএনপি দেশের বাজার ব্যবস্থাকে অস্থির করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তবে, জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেবে না।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার দুরভিসন্ধি বিএনপির মানসিক বৈকল্যেরই বহিঃপ্রকাশ। তাদের ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না। যারা ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে, দেশের জনগণ তাদেরই বয়কট করবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটা রাজনৈতিক দল কতটা দেউলিয়া হলে, উগ্র মানসিকতাসম্পন্ন অবিবেচক হলে, কতটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত হলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে বয়কটের মতো কথা বলে। আজকে বিশ্ব বাস্তবতায় এবং আঞ্চলিক ভূ-কৌশলগত অবস্থানের দিক দিয়ে ভারত আমাদের তিন দিকেই বেষ্টিত। এক দিকে শুধু মিয়ানমার। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বড় অংশই ভারত থেকে আসে। এর সুবিধাও আছে। দূর দেশ থেকে আমদানি খরচও বেশি। কাজেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার দুরভিসন্ধি বিএনপির মানসিক বৈকল্যরই বহিঃপ্রকাশ। নির্বাচনে না এসে তাদের মস্ত বড় খেসারত দিতে হচ্ছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এক সিনিয়র নেতা দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইছেন, অপরদিকে বিএনপিরই এক জুনিয়র নেতা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছেন। আসলে বিএনপির রাজনীতি এলোমেলো, গোলমেলে। এখন কাকে খুশি করতে চাইছেন তারা, এটা বুঝতে পারছি না। বিএনপি আসলে কোন পথে চলবে? তারা এখন পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা হয়ে পড়েছে এবং দিশেহারা হয়ে যখন যা খুশি তাই বলছে, যা খুশি করছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ২১ বছর ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক বাংলাদেশেরই বেশি ক্ষতি করেছে, মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সম্পর্ক ভালো রেখেই সুবিধা আদায় সম্ভব। তা করে দেখিয়েছে আওয়ামী লীগ। ছিটমহল বিনিময়, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি। এখন তিস্তা ও ফেনী নদীর পানিবণ্টনসহ যেগুলো সমাধান হয়নি, সম্পর্ক ভালো থাকায় এগুলো নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি আছে, সমাধানও সম্ভব। প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়া করে লাভ নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তান আমল থেকেই ভারতবিরোধিতার নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চলছে। আজকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিএনপিনেতাদের দমন-পীড়নের অভিযোগের সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে একে একে প্রায় সব নেতা জেল থেকে বের হয়ে গেছেন। অথচ মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে বলছেন, তাদের ওপর দমন-পীড়ন চলছে। প্রায় সব নেতাই জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছেন। এখানে দমন-পীড়ন কোথায়? এটা কি স্ববিরোধী বক্তব্য নয়?
ভারতের ভূমি দিয়ে ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত অসম্মত হবে না বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভুটানের রাজা বাংলাদেশে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। ভুটানের রাজার পরিবারের সাথে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক সম্পর্ক আছে। ভারতের ভূমি ব্যবহার করে ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারত অসম্মত হবে না বলে মনে করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।