টাঙ্গাইলের নাগরপুরের মামুদনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশরুমে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে। ওই পাশবিক ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টির পাঁচদিন পর রোববার(২৫ মে) ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিজানকে(৪০) গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মে(মঙ্গলবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুল চলাকালে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী(১১) ওয়াশরুমে যায়। এ সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা মিজানুর রহমান হঠাৎ ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে এবং ছুরি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তার উপর যৌন নিগ্রহ চালায়।
ওই ছাত্রী অসুস্থ অবস্থায় কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেলে পরিবারের সদস্যরা ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারেন। তবে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীর চাপে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেনি। অবশেষে ঘটনার কয়েকদিন পর গত ২৪ মে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় (রেজি নম্বর: ৫২৭/৫২৭)। হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসকরা তার উপর যৌন নিগ্রহের আলামত পাওয়ার পর প্রমাণ হিসেবে মেডিকেল রিপোর্ট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৪ মে নাগরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-১৮, তাং-২৪/৫/২৫ইং)। মামলার পর নাগরপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামুদ নগর বাজার সংলগ্ন ভাড়া বাসা থেকে অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত মিজান নাগরপুর উপজেলার পুগলী ইউনিয়নের ভাগনুরা গ্রামের মৃত সোহরাব আলী ও মৃত রাহিমা বেগমের ছেলে।
ওই ছাত্রীর বাবা জানান, তার মেয়ের জীবনের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। প্রথমে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল- কিন্তু পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে তাকে অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তারা ন্যায়বিচার চান।
নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। প্রাথমিক তদন্ত ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।