মো. রুবেল আহমেদ: পাল তোলা নৌকার ঐতিহ্য হারিয়ে গেলেও, বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে বাড়ছে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বাড়ছে ছোট ও মাঝারি নৌকার চাহিদা। যমুনা নদীর তীরে বসতবাড়ি বানানো এবং চরাঞ্চলের বাড়িঘরের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার, মানুষের যাতায়াতের জন্য প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বাড়ে ছোট ও মাঝারি নৌকার চাহিদা।
নৌকা বানানোর কারিগররা জানান, মোটামুটি মানের কাঠ দিয়ে ১২-১৫ হাত নৌকা বানানোর জন্য ৩/৪হাজার টাকার কাঠ ও ১৫শ থেকে ২হাজার টাকা কারিগর খরচ হয়। এগুলো ৭-৮হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করা যায়। এগুলো ৩মাস থেকে ৩বছর পর্যন্ত টেকসই হয়। ভালো মানের কাঠ দিয়ে তৈরি একটি নৌকা বানানোর খরচ হয় ১৩হাজার টাকা, এগুলো ১৫হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়, ৪-৫ বছর টেকসই হয়।
ইউকিলিপট্যাস, আম, কাঁঠাল, পিত্তাস ও মেহগনি কাঠে ব্যবহার হয় নৌকা বানানোর জন্য।
নবগ্রাম বাজারের নৌকার কারিগর রবিউল ইসলাম বলেন, মধুপুর থেকে এসে ৪বছর আগে এখানে ব্যবসা করছি, ছোট নৌকার অনেক চাহিদা। ঠিকমতো কাঠ পাওয়া যায় না এবং কাঠের দাম অনেক বেশি হওয়ায় খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু ক্রেতারা আগের মতোই দাম বলছে, এতে বিক্রি কিছুটা কমেছে। প্রতি মৌসুমে ৪০-৫০টা নৌকা বিক্রি হয়। এবার অন্তত ১০টি নৌকা বিক্রি হয়েছে। আমার অধীনে ৪-৫জন কারিগর কাজ করছে ।
সোনামুই বাজারের নৌকা ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, এবার কাঠ পাওয়া অনেক কষ্টকর, প্রতিদিন ৩-৪টি নৌকা বিক্রি হচ্ছে, প্রতিদিন নতুন অর্ডার পাচ্ছি। প্রতিবারের মতো এবারো নৌকার চাহিদা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অন্তত ৬০-৭০টি নৌকা বিক্রি হয়, এতে ৩০-৪০টাকা লাভ হয় । আমার অধীনে ৩জন কারিগর নিয়মিত কাজ করছে।
সোনামুই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সুমন মিয়া বলেন, টাঙ্গাইল থেকে ৩বছর আগে এখানে এসেছি, নিজেই কারিগর। অন্যান্য আসবাবপত্রের পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে নৌকা বানিয়ে হাটে বিক্রি করি। এবার কাঠের দাম বেড়েছে তাই নৌকার দাম কিছুটা বেশি। প্রতি মৌসুমে অন্তত ৪০টি নৌকা বিক্রি করে থাকি । নৌকা গুলো নিয়ে আলকাতরা দিয়ে সযত্নে ব্যবহার করলে ৩-৪বছর টেকসই হয়।