মো. রুবেল আহমেদ: কৃষি প্রধান বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনে কৃষকের রয়েছে অসামান্য অবদান। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, তীব্র শৈত্যপ্রবাহেও হাড়ভাঙা পরিশ্রমে কৃষকের অসামান্য অবদানের জন্যই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে বাংলাদেশ। পেঁয়াজ উৎপাদনে পিছিয়ে থাকলেও। ধান, ফলমূল, শাকসবজি, দুধ,মাছ, মাংস এবং অন্যান্য খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকেরা অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করছে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে প্রতিদিন জোগান দিচ্ছেন ১৮কোটি মানুষের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ ও আহারের।
দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যেই কৃষকের এতো অবদান। সেই কৃষককে রাখা হয় না রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে। কেউ কাছে থেকে জানতেও চায় না, কৃষকের সুবিধা—অসুবিধার কথাগুলো। অতীত বা বর্তমানের সরকারে ব্যবসায়ী, শ্রমিকনেতা, ধর্মীয় নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অন্তর্ভুক্ত থাকলেও। কখনোই একজন কৃষককে সরাসরি সরকারের অন্তর্ভুক্ত করার নজির নেই। বিষয়টি হতে পারে শিক্ষিত/অশিক্ষিতের বা গায়ে লেগে থাকা ঘামের গন্ধের। তাই বলে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষককে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারন রাজধানীতে উঁচু তলায় বসবাস করা মানুষের শেকড় বাকড় খুঁজলে অবশ্যই পাওয়া যাবে কৃষকের সম্পৃক্ততা। আর বর্তমানে উচ্চ শিক্ষিত অনেক যুবক স্বাবলম্বী হতে কৃষি বা খামারে সম্পৃক্ত হচ্ছে।
উদাহরণ স্বরূপ যদি বলি, টাঙ্গাইলের গোপালপুর একটি কৃষি প্রধান অঞ্চল। বছরে ২বার ধান চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের বাম্পার ফলন হয় এখানে। স্থানীয়রা কৃষকেরা বরাবরই অভিযোগ করে আসছে বীজ, কীটনাশক, সার কেনা এবং শ্রমিকের উচ্চ মূল্যের কারণে; চাষাবাদের খরচ সাথে উৎপাদিত ফসলের মূল্যের ঘাটতি দেখা দেয়। তবুও কৃষক নিজের প্রয়োজন ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে চাষাবাদ করে যাচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী সারাদেশেই, বিগত কয়েক বছর ইরি মৌসুমে ব্রি২৮—ব্রি২৯ জাতের ধানে ব্লাষ্টের আক্রমণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এসব ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বন্যা, বর্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গনমাধ্যমে প্রচারিত কৃষি ভিত্তিক ২/১টা অনুষ্ঠান ছাড়া, কৃষকের সুবিধা—অসুবিধার কথা সরাসরি শোনার উপায় নেই। সমস্যা চিহ্নিত করে, খাদ্যেশস্যর উৎপাদন আমদানিমুখী থেকে রপ্তানিমুখী করতে। রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে সরাসরি কৃষকের সম্পৃক্ততা দরকার। যেহেতু দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তনে একটা সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। উপদেষ্টাদের বক্তব্যে আমরা আশ্বস্ত হচ্ছি বিভিন্ন খাতে সংস্কার আসবে। তাই আগামীতে কৃষি ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে। সরাসরি মতামত জানানোর সুযোগ করে দিতে, কৃষকের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী হতেই পারি।