আজ পহেলা জানুয়ারি। বছরের প্রথম দিনে বড় পরিবর্তন নিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। সারা দেশে আজ থেকে বিনামূল্যে যে নতুন বই বিতরণ হচ্ছে সেই বইয়ের মোড়কের ভেতরও এসেছে পরিবর্তন। আজ থেকে নবম শ্রেণিতে কোনো বিভাগ বিভাজন থাকছে না। অর্থাৎ নবম শ্রেণি থেকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ উঠে যাচ্ছে।
মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দিয়ে আজ থেকে শুরু হলো নতুন শিক্ষাবর্ষ।
মাধ্যমিক পর্যায়ে এতোদিন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে অভিন্ন বিষয় পড়ে নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা নামে আলাদা বিভাগ অর্থাৎ বাধ্যতামূলক কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি বিভাগভিত্তিক বিশেষায়িত কয়েকটি বিষয় পড়তে হতো। তবে নতুন এ নিয়মে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বিষয় পড়তে হবে।
বিদায়ী বছরের ২৩ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভাগ বিভাজন না থাকার বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এক অফিস আদেশের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের এ বিষয়ে অবহিত করে।
আদেশে বলা হয়, মাধ্যমিক পর্যায়ে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) বিভাজন না থাকার বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে পত্র জারির মাধ্যমে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
মূলত ২০২৩ সাল থেকেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়। এ সময় প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের পুরো বাস্তবায়ন শুরু হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে, ২০২৪ সালে প্রাথমিকের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণি, ২০২৫ সালে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম এবং মাধ্যমিকের দশম শ্রেণি নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে। আর ২০২৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণি নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় আসবে।
বড় পরিবর্তন নিয়ে শুরু হওয়া এ শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা ইতিবাচক হবে। এ প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিভাগ বিভাজন থাকে না। বাংলাদেশে আজ থেকে যে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দেয়া হয়েছে, সেটা অবশ্যই ইতিবাচক।
তবে বাংলাদেশে এ বিভাগ বিভাজনকে বাদ দেয়ায় সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দেয়া উচিত। বিভাগ বিভাজন না থাকার সঠিক সিস্টেমটা শিক্ষার্থীদের দিতে হবে এবং শিক্ষার্থীরা এ সিস্টেমটা কতটুকু নিতে পারছে তা সূক্ষ্মভাবে নজরে রাখতে হবে বলেও তিনি মত দেন।