টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী নওয়াব শাহী জামে মসজিদে এবারও ফুটেছে দুর্লভ ম্যাগনোলিয়া ফুল। ম্যাগনোলিয়া নান্দনিক একটি ফুল। এ ফুলটিকে দোলনচাঁপা নামেই চিনে। আবার হিমচাঁপা বা উদয়পদ্ম নামেও লোকমুখে আছে। তবে ম্যাগনোলিয়াই সবচেয়ে বেশি পরিচিত নাম।
এটি দেখতে সুন্দর ও ধবধবে সাদা এই ফুল থেকে মনকাড়া সুগন্ধি উপভোগ করা যায়। এ ম্যাগনোলিয়া পরিবেশবান্ধব বলে অনেকে শখ করে রোপণ করে থাকেন। সব স্থানে ফুল গাছটি দেখা যায় না। এর ভেষজ গুণাগুণ বিদ্যমান; যেমন- জ্বর, ডায়রিয়া, আর্থ্রাইটিস, প্রেসার, মৃগীরোগ, হৃদরোগ নিরাময়ে ম্যাগনোলিয়া দেহের ব্যাপক উপকার করে। প্রকৃতির বন্ধু বলে দানেই সে ধন্য, এজন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর কোনো জুড়ি নেই।
নওয়াব শাহী জামে মসজিদের উত্তর পাশে দেয়ালঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা গাছে ফুটেছে এ ফুল। ১২টি পাপড়ি সাজানো দুই সারিত উপরেরগুলো ছোট, নিচেরগুলো অপেক্ষাকৃত বড়। ফুলের কেন্দ্রে শম্বুকের মতো আকর্ষণীয় গর্ভমুণ্ড যেন চুম্বকের মতো টেনে নিচ্ছে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি।
জানা যায়, ম্যাগনোলিয়া ফুল ডালের ঠিক আগায় সূর্যের মতো উদয় হয়। তাই হয়তো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ম্যাগনোলিয়ার নাম দিয়েছেন উদয়পদ্ম। ম্যাগনোলিয়ায় বহু বর্ষজীবী ও চিরসবুজ। পাতা দেখতে কাঁঠালের পাতার মতো। তবে কাঁঠালের পাতার চেয়ে বেশি লম্বাটে। পাতার ওপর কালচে সবুজ। দেখতে ৫ থেকে ৮ ইঞ্চি হয়। পাতাগুলো ডালের ওপর ঊর্ধ্বমুখীভাবে সাজানো থাকে। ফুল ফোটা শুরু হয় বসন্তের শেষ থেকে বর্ষাকাল পর্যন্ত। তবে চলতি গ্রীষ্মকালে এ ফুল ফোটে বেশি। ম্যাগনোলিয়া ফুলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো এর কেন্দ্রস্থল । এই ফুল গাছটির আয়ু কাল হয়ে থাক ১০০ থেকে ১২০ বছর । ম্যাগনোলিয়া বা উদয়পদ্মের পাতা ও ফুল থেকে তেল নিষ্কাশন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ বন্য প্রাণী আইন-২০১২-এ ম্যাগনোলিয়া এদেশে সংরক্ষিত উদ্ভিদ, এ গাছ কাটা নিষেধ।
ধনবাড়ী নওয়াব শাহী জামে মসজিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম ইদ্রিস হোসাইন বলেন, নওয়াব শাহী জামে মসজিদে শতবর্ষ ধরে ফুটে আসছে এই ম্যাগনোলিয়া ফুল প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও ম্যাগনোলিয়া ফুল ফুটেছে। এখানে যে ফুল গাছটি রয়েছে সেটি শত বর্ষীয় পুরাতন একটি ফুল গাছ । এখন পর্যন্ত গাছে কয়েকটি ফুল ও কলি রয়েছে। এর মধ্যে একটি আজকে ফুটেছে। এ ফুলের সৌন্দর্য প্রকৃতি প্রেমীদের মুগ্ধ করে।