নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার দেওয়ান মনোহর খাঁর বাগে অবস্থিত দেওয়ানবাগী পীরের আস্তানা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভাংচুর ও লুটপাট শুরু হয়। একপর্যায়ে আস্তানায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত আগুন জ্বলে। পরে আশেপাশের এলাকার লোকজন আগুন নেভায়। এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার বিকালে বিতর্কিত দেওয়ানবাগী পীরের জন্মবার্ষিকী পালনের প্রস্তুতি নেয় তার অনুসারীরা। এ সময় দেওয়ানবাগী পীরের আস্তানার পাশে দেওয়ানবাগ জামে মসজিদের মুসল্লিরা বাধা দিলে পীরের অনুসারীরা মুসল্লিদের ধাওয়া করে।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকাল ৭টায় আশেপাশের ৮-১০ গ্রামের মুসল্লিরা বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিতর্কিত দেওয়ানবাগী পীরের আস্তানায় হামলা চালায়। ভাংচুর, লুটপাট শুরু করে। একপর্যায়ে তারা আস্তানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। সংবাদ পেয়ে জেলা পুলিশের এএসপি বিল্লাল হোসেন ও বন্দর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দেওয়ানবাগ পীরের মুরিদদের সংগঠন আশেকে রসুল পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের জানান, এলাকার কিছু কুচক্রী লোক আমাদের আস্তানায় হামলা চালিয়েছে। এটি আমাদের কেনা জায়গা।
আমাদের নিজস্ব জায়গায় অনুষ্ঠান করলে কেউ সেখানে আইনত বাধা দিতে পারে না।’ সেখানে দেওয়ানবাগী পীরের মাজার ভাংচুর হয়েছে এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে জানালে তিনি বলেন, আমাদের পীরের মাজার ঢাকার মতিঝিলে। দেওয়ানবাগে তার ছেলে মনির-এ-খোদা ও তার ভাই আব্দুর রহমান সরকারের মাজার রয়েছে। সেগুলো ভাংচুর হয়েছে। এছাড়া দরবার শরীফের বাকি স্থাপনা ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বন্দর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক জানান, সেখানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। কোনো হতাহতের খবরও আমরা পাইনি। কেউ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রায় ২০ বছর আগে দেওয়ানবাগী পীর মাহবুব-এ-খোদা ইসলাম নিয়ে নানা বক্তব্য দিয়ে বিতর্কিত হন। এ নিয়ে আলেম ওলামাদের মধ্যে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। সে সময় দেওয়ানবাগী পীরের অনুসারীদের সাথে এলাকাবাসীসহ মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় দেওয়ানবাগী পীরের অনুসারীদের গুলিতে বেশ কয়েকজন নিহত হন। ২০২০ সালের দেওয়ানবাগী পীর মারা যায়।