টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনে অংশ নেয়া যুবতীকে (২২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী যুবতী জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন। ওই যুবতী চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেন।
মামলা সূত্রে ও ভুক্তভোগী নারী জানায়, মির্জাপুর উপজেলার আরাফাত হোসেনের সাথে একই উপজেলার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনে অংশ নেয়া যুবতীর সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয়। আরাফাত ফেসবুকে বিভিন্ন প্রকার হাদীস এবং ইসলামী ঘটনা পোস্ট করে যুবতীকে পাঠাতেন। পরে আরাফাত নানার বাড়িতে আসলে ওই যুবতীর সাথে যোগাযোগ হতো। পরে আরাফাত উপজেলার কাকলী মোড়ের গোল্ডেন স্পন হোটেল যাইতে বলে। আরাফাতের কথা মত হোটেলে যায় ওই যুবতী। এক পর্যায়ে আরাফাত হোটেলের ওয়াশরুমে তার ফোনের ক্যামেরা অন করে রাখে এবং গোপনে নগ্ন ছবি ধারণ করে।
পরে সে আমাকে তার কথিত বোন লাকী আক্তারের বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় যাওয়ার লাকী আক্তার আমাকে আরাফাতের সাথে বিয়ের কথা বলে। পরে কৌশলে আমাকে এবং আরাফাতকে অন্য একটি রুমে বসতে দিয়ে চলে যায়। এসময় আরাফাত মোবাইলে ধারণ করা নগ্ন ছবি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য প্রস্তাব দেয়। আমি শারীরিক সম্পর্ক করতে না চাইলে পাশের রুম থেকে লাকী আক্তার আমাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় লাকি আক্তার পিছন দিক থেকে আমার হাত ও মুখ চেপে ধরে বিছানায় ফেলে দেয়। পরে আরাফাত আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তারা দুইজনের ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়ে ভাইরাল করার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আমাকে বিয়ের প্রলোভন এবং মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ডিলিট করে দিবে বলে জানায়। এরপর আমাকে বিয়ে করবে এবং বাড়ীতে কাজী আসার কথা বলে লাকী আক্তারের বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় তারা গোপন আমার গোপন ছবিগুলো ডিলিট করে দেয়ার কথা বলে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকার জানাই এবং পুলিশকে ফোন দিয়ে ঘটনার সর্ম্পকে অবগত করার কথা বলে তারা আমার ফোন কেড়ে নেয়। পরে আবারো লাকী আক্তারের সহযোগিতায় আরাফাত আমাকে ধর্ষণ করলে আমি এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে এক পর্যায়ে আমি জানতে পারি প্রেগন্যান্ট। বিষয়টি আরাফাতকে জানালে তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলে জানাবে বলে আমাকে জানায়। পরে আমাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কৌশলে যত্ন করতে থাকে এবং তারা পরিবারের লোকজন আমাকে আদর যত্ন করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে নানা প্রকারের খাবার খাওয়ায়। পরে সেখান থেকে বাড়িতে চলে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমার পেটে ব্যাগ শুরু হয়। মির্জাপুর আধুনিক হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে জানায় আমার ভ্রুন পড়ে গেছে।
ভুক্তভোগী নারী জানায়, তারা আমাকে মিথ্যা কথা বলে খাবারের মধ্যে ওষুধ মিশিয়ে আমাকে খাওয়াইছে। আমি এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আমি ঘটনায় জড়িত সকলের বিচারের দাবি করছি। আরাফাত হোসেন একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর এডভোকেট রউশন আরা সিদ্দিকী বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মির্জাপুর থানাকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত আরাফাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ওই যুবতী আদালতে জাবানবন্দি দিয়েছেন এবং হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
