স্টাফ রিপোর্টার: টাঙ্গাইলের পৌর এলাকার বেড়াডোমায় লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন ব্রিজ ভেঙে হেলে পড়ার ঘটনায় মেয়রসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। উপপরিচালক মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে এসব তথ্য জানা যায়।
পত্রে মামলাটি দ্রুত এজারভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিক্সস অ্যান্ড ব্রিজেজ লি. অ্যান্ড দি নির্মাতা (জেভি) সত্ত্বাধিকারী মোস্তফা মোহাম্মদ মাসুদ, প্রকল্প পরিচালক এ কে এম রশীদ আহমেদ, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশরী শিব্বির আহম্মেদ আজমী, সহকারী প্রকৌমরী রাজীব কুমার গুহ, উপসহকারী প্রকৌশলী একেএম জিন্নাতুল হক।
টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বেড়াডোমা লৌহজং নদীর ওপর এলজিইডির অর্থায়নে নির্মাণাধীন এ সেতুটির কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বভার ছিল টাঙ্গাইল পৌরসভার। ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ৪০ মিটার দৈর্ঘ্য আর ৮ মিটার প্রস্থের ব্রিজটি সেতুটি ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর নির্মান কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ১১ মে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই বছরই ১৬ জুন রাতে নির্মাণাধীন সেতুর পশ্চিমপাশে সেতুর একাংশ দেবে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ধারনা করা হয় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দেবে গেছে।
পরবর্তীতে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করে। অবশেষে অভিযুক্ত মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশনা দেয়া হলো। নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি দেবে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ জনগন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, স্থানীয় এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির বন্ধুবান্ধব এ সেতুর কথিত ঠিকাদার। এরা ঢাকার মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্মাণকাজে বাধা দিয়েছে। জোরপূর্বক ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে কাজ বাগিয়ে নিয়েছে। নির্মানকাজে অত্যন্ত নিম্নমানের জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলেই এ ধরনের দূর্ঘটনা ঘটে।
মামলা দায়েরের বিষয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। মামলা হলে যথাযত আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।