ছাগল পালন করে কিভাবে সচ্ছলতা এনেছেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌর শহরের বসুবাড়ীর বাসিন্দা শিল্পী রানী (৪৫) এবং হাটবৈরান গ্রামের আন্না বেগম (৩২) সেই চিত্র উঠে এসেছে দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানে।
সরেজমিনে জানা যায়, ২০১৪ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নত জীবনের সন্ধানে (উষা) থেকে বিনামূল্যে ১টি মাঝ বয়সী ছাগল এবং ছাগল পালনের প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন, বসুবাড়ীর বাসিন্দা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন অমল চন্দ্র । উন্নত জাতের যমুনা পাড়ি ছাগল (রাম ছাগল)টি অমল চন্দ্র ও তার সহধর্মিণী শিল্পী রানী সযত্নে লালন পালন করেন। সেই ছাগলটি প্রথম বছর ১টি বাচ্চা দিলেও পরেরবার একাধিক বাচ্চা দেয়। এভাবেই বংশ বিস্তার করে এখন পর্যন্ত ২০টির বেশি ছাগল জন্ম নেয়। এর থেকে ১৪-১৫টির মতো ছাগল দেড় লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করে, ৬টিনের ছাপড়া ঘর থেকে বড় ৪চালা টিনের ঘর দিয়েছেন তারা। অমল চন্দ্র ৭মাস আগে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন। শিল্পী রানী বলেন, শেষ সম্বল হিসাবে রেখে গেছেন ৩টি ছাগল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৪০হাজার টাকা। কয়েকটি ছাগল অসুখে মারা গেছে।
একই সংস্থা থেকে ২০২২সালে ১টি ছাগল পেয়েছিলেন, হাটবৈরান গ্রামের ভ্যান চালক শাহআলমের স্ত্রী আন্না বেগম। এপর্যন্ত ৪টি ছাগল বিক্রি করেন, সাথে কিছু টাকা যোগ করে ১টি উন্নত জাতের বকনা গরু কিনেছেন। ২টি ছাগল অসুখে মারা গেছে এবং এখনো ১টি খাসি রয়ে গেছে। যার বর্তমান আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫হাজার টাকা। আন্না বেগম বলেন, আমার এক মেয়ে ৭ম শ্রেণী ও আরেক মেয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়ে। ১টা ছাগল রেখে দিয়েছি, তাদের পড়ালেখার জন্য টাকার দরকার হলে এটি সহায়ক হবে।
জানা যায়, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন(বিএনএফ) এর অর্থায়নে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিশেষ জরিপ পরিচালনা করে দরিদ্র পরিবারের সন্ধান করেন উন্নত জীবনের সন্ধানে (উষা)। দরিদ্রদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২০০টি সেলাই মেশিন এবং প্রতিবছর ছাগল বিতরণ করে আসছে।
উষা’র নির্বাহী পরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিল বলেন, দারিদ্র্যতা দুর করে মানুষকে স্বাবলম্বী করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অডিট করা হয়। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন থেকে ইউএনও, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।