পারিবারিক সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের ভুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, ঐ বংশের পূর্ব পুরুষ মোহাম্মদ আলী বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের সাজানপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজুলী বেগমকে।
কাজুলী বেগমের ভাই এই রোগাক্রান্ত ছিলেন, ৬সন্তান জন্মদানের পর কাজুলী বেগম এই রোগে আক্রান্ত হয়ে, ৬০বছর বয়সে ৩ছেলে, ৩মেয়ে রেখে মারা যায়।
মোহাম্মদ আলী-কাজুলী বেগম দম্পতির ৩মেয়ে মাবি ৩৫বছরে, আবি ৪০ বছরে, সাফি ২৮বছর বয়সে মারা যান।
এছাড়াও তাদের ছেলে সন্তান মসলিম উদ্দিন একই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০বছর বয়সে ৩ছেলে রেখে যারা যান। মসলিম উদ্দিনের বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) ৫বছর আগে আক্রান্ত হয়। শহিদুলের বড় ছেলে আমিনুল ইসলাম(১৪) ৩বছর আগে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পরিবারটি মানবেতর জীবন-যাপন করছে। মসলিম উদ্দিনের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫) এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১বছর আগে মারা গেছে।
মোহাম্মদ আলী-কাজুলী বেগম দম্পতির আরেক ছেলে আবুল হোসেন (৬০) আক্রান্ত হয় ২০ বছর আগে মারা যান, আবুল হোসেনের ছেলে আক্রান্ত হাফিজুর রহমান (৪৫), ১০ আগে মারা যান। হাফিজুর রহমানের ছেলে মো. সিফাত(২০) বর্তমানে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
আবুল হোসেনের মেয়ে রোজিনা বেগম(৩৫) ২সন্তান জন্মাদানে পর আক্রান্ত হলে, স্বামী ডিভোর্স দিয়ে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। নাতনি সুমাইয়া খাতুন(১৭) একই রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, দরিদ্র কৃষক পরিবারের সদস্য হওয়ায় অর্থভাবে তাদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না, এবং খুব কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। একবার শহিদুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়েছিলেন ডাক্তার রোগ ধরতে পারেনি। এই কারনে তাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দাবি, অবিলম্বে সরকার দায়িত্ব নিয়ে পরিবারের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবে ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করুক।
গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ডাক্তার খাইরুল ইসলাম বলেন, বর্ননা শুনে ও ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে তারা উইলসন ডিজিসে আক্রান্ত। এটা বংশগত রোগ, আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে পরিক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে সুচিকিৎসা দেয়া হবে। প্রয়োজনে টাঙ্গাইল বা ঢাকায় রেফার্ড করা হবে।