গুলি করে ৭৮ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের অস্ত্রধারী সক্রিয় সদস্য অস্ত্র (বিদেশি সচল পিস্তল) ও ম্যাগজিন ভর্তি গুলিসহ গ্রেফতার এবং মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার।

গত ইং ২২/০৩/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.১৫ ঘটিকায় মির্জাপুর থানাধীন বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাঁও সাকিনস্থ হুমায়ুন ব্রিকস এর দক্ষিণ পার্শ্বে জনৈক ফরিদ পাটওয়ারীর জমির প্রাচীর সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বের গেটের পার্শ্বে সখিপুর-গোড়াই আঞ্চলিক সড়কের গোড়াইগামী পাকা রাস্তার উপর ১টি দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত হায়েস মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল দিয়ে মহিষ ব্যবসায়ীদের বহনকারী প্রাইভেটকারকে চাপ দিয়ে বর্ণিত ঘটনাস্থলে থামায়। ডাকাতরা প্রথমে প্রাইভেটকারের সামনের গ্লাসে আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলে এবং মহিষ ব্যবসায়ীদের বহনকারী প্রাইভেটকারে মহিষ বিক্রির ৭৮,০০,০০০/- (আটাত্তর লক্ষ) টাকার ২টি ব্যাগ দিয়ে দিতে বলে। মহিষ ব্যবসায়ীগণ টাকা দিতে না চাইলে অজ্ঞাতনামা ২ ডাকাত তাদের কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি করে। মহিষ ব্যবসায়ীগণ প্রাণের ভয়ে তাদের কাছে থাকা ২টি টাকা ভর্তি ব্যাগ ডাকাতদের কে দিয়ে দেয়। এতদ সংক্রান্তে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায় ১টি ডাকাতি মামলা রুজু হয় যার নং- ৪২, তারিখ-২৩/০৩/২৫ খ্রিঃ। গুলি করে টাকা ডাকাতির মামলা তদন্তে টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ডিবি, টাঙ্গাইল ও মির্জাপুর থানা পুলিশের একাধিক আভিযানিক দল তদন্তে নামে।
তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল জেলার ডিবি পুলিশ এবং মির্জাপুর থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত ১টি চৌকস টিম বরিশাল, ডিএমপি ঢাকাসহ বিভিন্ন ধানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। গত ইং১১/০৪/২০২৫ তারিখ আভিযানিক দলটি ডিএমপি ঢাকা ‘র হাজারীবাগ থানা এলাকা হতে হায়েস মাইক্রোবাস চালক ডাকাত মিলনকে গ্রেফতার করে এবং তার হেফাজত হতে অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত হায়েস মাইক্রোবাস ও লুণ্ঠিত নগদ ১২,০০০/- (বারো হাজার) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে। উক্ত মিলন ডাকাত নিজেকে জড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
অত্র মামলার ঘটনার সেকেন্ড ইন কমান্ড ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে আভিযানিক দলটি ডিএমপি, ঢাকার যাত্রাবাড়ি ধানা এলাকা হতে গত ইং ১৮/০৪/২০২৫ তারিখ গ্রেফতার করে। উক্ত ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করাকালে সে জানায় তার নিকট অত্র মামলার ঘটনায় লুণ্ঠিত ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা তার ভাড়া বাসায় আছে। অভিযানিক দলটি রিমান্ডের আসামী ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে নিয়ে ডিএমপি, ঢাকার ডেমরা থানাধীন কোনাপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত আসামীর দেখানো মতে অত্র মামলার লুণ্ঠিত নগদ ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা উদ্ধার করা হয়। উক্ত আসামীর দেখানো মতে মির্জাপুর থানাধীন বেলতৈল সিরামিকস্ মোড় পাকা রাস্তার পার্শ্বের জঙ্গল হতে ১০ (দশ) রাউন্ড তাজা পিস্তলের গুলি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। গুলি উদ্ধার সংক্রান্তে মির্জাপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত ডাকাত মিলন ও ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনদ্বয় জানায় যে, অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি বিদেশী পিস্তল ও ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি কালো-লাল পালসার মোটরসাইকেল সাগর বারুই এর নিকট রয়েছে। উক্ত তথ্য ও বিশ্বস্ত গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি (উত্তর), টাঙ্গাইল এবং মির্জাপুর থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত ১টি চৌকস টিম ডিএমপি, ঢাকার খিলগাঁও থানা এলাকা থেকে ইং ০৪/০৫/২০২৫ তারিখ সকালে অস্ত্রধারী শুটার সাগর বারুই (৪২) কে গ্রেফতার করে এবং অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি কালো-লাল রংয়ের পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।
পরবর্তীতে উক্ত আসামীকে ডিবি (উত্তর) টিম সুকৈাশলে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে প্রাথমিকভাবে সে জানায় যে অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত পিস্তলটি সে গত ইং ০৩/০৫/২০২৫ তারিখে মির্জাপুর হাইওয়ে ১টি বিদ্যুৎ খুঁটির আশপাশে জঙ্গলে রেখেছে। উক্ত আসামীর দেখানো মতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর থানাধীন মির্জাপুর পৌরসভার অন্তর্গত কুমারজানী বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশের জঙ্গল হতে ম্যাগাজিন ভর্তি ৭ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১টি সচল বিদেশী পিস্তল উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। অস্ত্র-গুলি উদ্ধার সংক্রান্তে মির্জাপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ডাকাত সাগর বাড়ই (৪০), জেলা- গোপালগঞ্জ। আন্তঃজেলা ডাকত দলের সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, দস্যুতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উদ্ধারঃ
১। ম্যাগজিন ভর্তি ০৭ (সাত) রাউন্ড তাজা গুলিসহ ০১ (এক) টি বিদেশি সচল পিস্তল
২। ১০ (দশ) রাউন্ড তাজা গুলি
৩। ৩,১২,০০০/- (তিন লক্ষ বার হাজার) টাকা
৪। ০৩ (তিন) টি মোটর সাইকেল
৫। ০১ (এক) টি হাইস গাড়ি