গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদেরও বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা সড়ক থেকে সরেনি। এরপর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টিয়ারশেল ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। পরে শ্রমিকরা সরে গেলে যান চলাচল স্বভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলো হলো, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বেতনের সাথে ইনক্রিমেন্টের ৭ মাসের এরিয়ার বিল আগস্ট মাসের ১ তারিখের মধ্যে প্রদান করতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং যোগ্য পদে অযোগ্য লোক থাকলে তাকে অতিদ্রত অপসারণ করতে হবে, প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বাড়তি বেতন নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো, আন্দোলনরত অবস্থায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরায় দিতে হবে, নতুন ও পুরাতন শ্রমিকদের বেতন কাঠামো সঠিকভাবে প্রণয়ন করতে হবে, সিভিলদের সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা হাজিরা ও ১৫০০ টাকা হাজিরা বোনাস করতে হবে। আন্দোলনের পরে কর্মস্থলে যোগদান করার পর যদি কোনও কর্মচারী বা শ্রমিককে বহিস্কার বা চাকুরিচ্যুতি করা হয় তবে পুনরায় আন্দোলন হবে, বয়স্কভাতাসহ পুরাতন সকল সুযোগ-সুবিধা পুনরায় চালু করতে হবে, কোম্পানীর ভেতর থেকে শুরু করে কোম্পানীর উচ্চপদস্থ সকল ভারতীয়দেরকে অনতিবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ তা মানছে না। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। দীর্ঘদিন যাবত কর্তৃপক্ষ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। আরএকে সিরামিক কারখানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শ্রমিকদের দাবিগুলো যাচাই-বাছাই করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তাদের অনেকগুলো দাবী যুক্তিসঙ্গত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তা মেনে নিতে পারছে না। আরএকে সিরামিক কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের দাবির বিষয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কর্তৃপক্ষকে সময় না দিয়ে কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিকের উস্কানীতে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) আব্দুল লতিফ বলেন, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদেরকে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হয়। পরে সড়ক থেকে না ছাড়লে টিয়ারসেল ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।