বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আট বছরে শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৪৫টি মামলার প্রায় সবগুলোই প্রত্যাহার হয়েছে। এর ফলে অভিযুক্ত ও অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৪৭ হাজার ৭২৮ জন শ্রমিক মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
তবে শ্রমিক হত্যার অভিযোগে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলা এখনও প্রত্যাহার হয়নি বলে জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। কোন থানায় কত মামলা হয়েছিল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা ও গাজীপুর জেলার চার থানায় এই ৪৫টি মামলা হয়। এর মধ্যে— আশুলিয়া থানায় ১৫টি মামলা কালিয়াকৈর থানায় ১৪টি মামলা.
কোনাবাড়ী থানায় ১০টি মামলা জয়দেবপুর থানায় ২টি মামলা বাসন থানায় ২টি মামলা টঙ্গী পশ্চিম থানায় ২টি মামলা মামলাগুলো মূলত বেতন-ভাতা বকেয়া, কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকার নিয়ে আন্দোলন ঘিরে দায়ের হয়েছিল। অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা, হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি।
কেন প্রত্যাহার হলো মামলাগুলো? ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ নভেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়।
পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী গুরুত্ব দেন রাজনৈতিক কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারে। এরপর বিষয়টি দ্রুত এগোয়।
সরকারের পদক্ষেপ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠকে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি বাবুল আক্তার বলেন, রাজনৈতিক ও অধিকার আদায়ে আন্দোলনের কারণে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এগুলো প্রত্যাহারে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে এটা কঠিন ছিল।”