হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ২৩ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তাঁরা এ আহ্বান জানান। বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকার পরও বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক আসিফ নজরুলের ই-মেইল থেকে। গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। গত সোমবার বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে।
আজ দেওয়া বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকার পরও বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জীবন বাঁচানোর জন্য তাঁকে অনতিবিলম্বে বিদেশে পাঠানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’ বিবৃতিতে বলা হয়, এ দেশে কোনো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও রাজনৈতিক দলের নেতাকে বিদেশে চিকিৎসায় পাঠানোর নজির রয়েছে। গণমাধ্যমে দেশের শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীরাও খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পেছনে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন। নাগরিকদের জীবনের অধিকার সব রাজনীতির ঊর্ধ্বে। এটি খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে প্রদান করা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে প্রতিফলিত হয়নি। বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘চিকিৎসকদের মতে, খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে তাঁকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি। আইনজীবীদের মতেও তাঁকে বিদেশে পাঠানো সম্ভব। তাই এ বিষয়ে আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পুনর্বিবেচনা করার এবং চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার এ ধরনের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখাতে অনীহ হলে তা শুধু খালেদা জিয়ার জীবনই বিপন্ন করবে না, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও নতুন বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।’
বিবৃতিদাতারা হলেন এম হাফিজ উদ্দিন খান, আলী ইমাম মজুমদার, শারমিন মুরশিদ, শাহদীন মালিক, রিজওয়ানা হাসান, তোফায়েল আহমেদ, শহিদুল আলম, সি আর আবরার, আসিফ নজরুল, স্বপন আদনান, হেলাল মহিউদ্দীন, শিরিন হক, ফরিদা আখতার, নূর খান, রেহনুমা আহমেদ, নায়লা জেড খান, হানা শামস আহমেদ, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, সাঈদ ফেরদৌস, সুব্রত চৌধুরী, অরূপ রাহী, সায়েদা গুলরুখ, বখতিয়ার আহমেদ।