ফের বড়সড় হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে ভারতের রাজ্য মণিপুরে। প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে ৯০০-এরও বেশি কুকি রাজ্যটিতে অনুপ্রবেশ করেছে। দেশটির গোয়েন্দা সূত্রে এই খবর পাওয়ার পরই রাজ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।শুক্রবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গোয়েন্দা তথ্যকে হালকাভাবে না নেওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং। তিনি বলেন, এরই মধ্যে এই তথ্য উচ্চমহলে পৌঁছে গেছে। এটি গত বৃহস্পতিবার প্রথম তাদের কাছে আসে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, এই কুকিরা ড্রোন-ভিত্তিক বোমা, প্রজেক্টাইল, মিসাইল এবং জঙ্গলের ভেতর থেকে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং বলেছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি ভুল প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের বিশ্বাস গোয়েন্দাদের এই রিপোর্ট ১০০ শতাংশ ঠিক এবং এই হুমকি প্রতিহত করতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।কুলদীপ সিং আরও জানান, যদি গোয়েন্দা তথ্য সত্যি না হয় বা যতক্ষণ না আমরা এই নাশকতাকে রুখে দিতে পারছি, কেউই এটাকে হালকাভাবে নিতে পারবে না।
মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের অফিস থেকে এই গোয়েন্দা সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এই কুকিরা ৩০ জন সদস্যের ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মেইতি অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কুকিদের লক্ষ্য চূড়াচাঁদপুর, তেংনৌপাল, উখরুল, কামজং, ফেরজোয়াল এলাকা।
ইতোমধ্যে, মণিপুরের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো রাজ্যে ড্রোন ব্যবহারের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) স্থাপন করেছে, সে অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাউকে ড্রোন বা এই ডিভাইসগুলো উড়তে দেওয়া হবে না।গত বৃহস্পতিবার ইম্ফল পূর্ব জেলার পার্বত্য অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মণিপুর পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ‘ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস’ (আইইডি) উদ্ধার করার পর গোয়েন্দাদের পক্ষে এই সতর্কবার্তা।উল্লেখ্য, কোটা এবং অর্থনৈতিক সুবিধা নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটে চলেছে। এই সহিংসতায় প্রায় আড়াই শতাধিকের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, ভিটে ছাড়া কয়েক হাজার মানুষ।