সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের সুখ-দুঃখের মিশ্র জীবন কাটাচ্ছেন। অনেকেই আসা-প্রত্যাশা অনুযায়ী বেতন পান না বা বেতন অনিয়মিত। কেউ ঠিকমতো বেতন পেলেও পরিবার থেকে দূরে থাকা কষ্টে দিন কাটাতে হয়।
প্রবাসীরা জানাচ্ছেন, নিজেদের দুঃখ-কষ্ট প্রিয়জনের কাছে পৌঁছায় না, তারা নিজেরাই সব কষ্ট কবর দেয়। পরিবারকে সুখী দেখানোর জন্য নিজেদের সব বিসর্জন দিতে হয়। অনেকের বেতন হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গে মনকে কিছুটা স্বস্তি আসে, কিন্তু সেই টাকা বেশিক্ষণ নিজের কাছে থাকে না। পরিবারের জন্য প্রায় সব অর্থ পাঠাতে হয়।
বাসাইলের শাহীন মিয়া বলেন, তিনি দেশে দলিল লেখকের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। ভালো বেতন হলেও পরিবারকে সাহায্য করার জন্য বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সৌদি আরবে প্রথমে দাম্মামে কাজ করেন, এরপর অন্য একটি কোম্পানিতে ১,২০০ রিয়াল বেতনে কাজ করছেন। তিনি জানান, পরিবার ও দেশের জন্য আশা-ভরসা রেখে বিদেশে থাকতে হয়, কিন্তু নিজের স্বাধীনতা সীমিত।
সদর উপজেলার সুমন মিয়া ১৮০০ রিয়াল বেতনে একটি হোটেলে কাজ করেন। আকামার মেয়াদ শেষ হলেও কোম্পানি পুনর্নবীকরণে সহযোগিতা করছে না। নিয়মিত বেতন না পাওয়া, পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে না পারার চাপ তার দিন কাটাচ্ছে কষ্টের মধ্যে।
সখীপুরের শাকিল মিয়া বলেন, দেশে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ব্যবসা ভালো চললেও বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিদেশে বেতন ভালো হলেও পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন থেকে দূরে থাকা মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। প্রতিদিন দীর্ঘ সময়ের ডিউটি করতে হয়।
প্রবাসীরা সবাই নতুন প্রবাসীদের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন: “৫-৬ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে যাওয়ার চেয়ে দেশে ব্যবসা করা বেশি ভালো। পরিবার ও আত্মীয়দের সাথে থাকা সহজ। প্রবাস জীবন মানেই কষ্ট, সব কিছু ত্যাগ করতে হয়।” এভাবেই দিন-রাত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিবারকে সুখী রাখার জন্য নিজের স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ বিসর্জন দিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন।