আবারও আর্থিক জটিলতায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। শর্ত অনুসারে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে সুদের টাকা না দেয়ায় আটকে আছে ঋণের ১৩তম কিস্তির টাকা। আবার এ নিয়ে দুই দেশের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরোধ গিয়ে ঠেকেছে আদালতে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জটিলতা যেন পিছু ছাড়ছে না।
নগরবাসীকে গতির নতুন পথ দেখিয়েছে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজই এখন ধীরগতির কবলে। হচ্ছে না অর্থ ছাড়, দুই দেশের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরোধ গিয়ে ঠেকেছে আদালতে। কেন এত জটিলতা? জানতে হলে একটু পেছনে ফিরতে হবে।
২০১১ সালে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পায় ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড। তবে অর্থ জোগাড় করতে না পারায় ৮ বছরেও কাজ শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯ সালে চাইনিজ দুটি কোম্পানি সিএসআই ও সিনোহাইড্রোকে ৪৯ ভাগ শেয়ার দেয় ইতালিয়ান-থাই। পরে দুটি চাইনিজ ব্যাংক চায়না এক্সিম ও আইসিবিসি থেকে ৮৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিয়ে কাজে নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান।
২০২০ সাল থেকে পুরোদমে কাজ শুরু হয়ে গত বছর চালু হয় একাংশ। এদিকে তেজগাঁও থেকে কুতুবখালি পর্যন্ত যখন কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে, তখনই ১৩তম কিস্তি দিচ্ছে না চাইনিজ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ইতালিয়ান-থাই শর্তানুসারে আগাম সুদের টাকা পরিশোধ না করায় এবারের কিস্তি দিচ্ছে না তারা। যদিও বাকি দুটি প্রতিষ্ঠানের এই সংকট নেই।
এদিকে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে পুরো শেয়ার বাকি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের এখতিয়ার রাখে। তাই আগেভাগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে থাই প্রতিষ্ঠানটি। আদালতে জানিয়েছেন এক মাসের মধ্যে করা যাবে না শেয়ার হস্তান্তর।
তবে সেতু বিভাগের দাবি, এসব জটিলতা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজে কোনো বাধা হবে না।
সেতুসচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন,
দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করছে ৩টি কোম্পানি। দ্বন্দ্বটি কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ। এর সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তারা তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে গেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশেও হাইকোর্টে তারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয়টি আমাদেরকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। বিষয়টি তাদের মধ্যেই থাকবে। তারপরও আমরা প্রতিটি কোম্পানির সঙ্গে বসেছি। পাশাপাশি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানির সঙ্গেও বসেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে, অভ্যন্তরীণ এ দ্বন্দ্বের জন্য কাজের কোনো সমস্যা হবে না।’
এরই মধ্যে তেজগাঁও থেকে কুতুবখালি অংশের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৭৫ শতাংশ।