টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কেরামজানী পশ্চিমপাড়ার হতদরিদ্র খেয়াঘাটের মাঝি সুরুজ্জামানের মেয়ে কেরামজানী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ শরীফা আক্তার বর্তমানে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় চেয়ে হয়রানির শিকার।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায় একই গ্রামের কেরামজানী পশ্চিম পাড়ার ওমান প্রবাসী লেবুর ছেলে এইচএসসির শিক্ষার্থী রবিন গত দেড় বছর আগে শরীফার সাথে নানা প্রলোভনে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে । শরীফার পিতা সুরুজ্জামান খেয়া ঘাটের মাঝি হওয়ার সুবাদে শরীফা প্রায়ই বাবার জন্য খাবার নিয়ে যেত।ওমান প্রবাসী লেবুর বাড়ি নদীর কাছে হওয়ায় শরীফার সাথে রবিনের দেখা সাক্ষাৎ হতো । রবিন শরীফাকে প্রেমের জালে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী গভীর নলকূপ ঘরে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ।
এতে এক পর্যায়ে শরীফা গর্ভবতী হয়ে যায়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিন নিজের দোষ এড়াতে কয়েকমাস পূর্বে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চাকরি করতে চলে যায়। শরীফার পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় এবং রবিনের পরিবার ধনী ও প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে ঘটনাটি কালক্ষেপণ হতে থাকে ।এক পর্যায়ে এলাকার মাতব্বররা শরীফার অভিযোগ আমলে নিয়ে সুষ্ঠ সমাধানের একাধিকবার বৈঠক করেন। এদিকে শরীফার মা জানান , ‘৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ফারুক হোসেন , প্রফেসর সালাউদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন দোলা, সুরুজ মেম্বার, , সহ মাতব্বররা মিমাংসার বৈঠক করেন গত ০৩/১০/২০২৪ ইং বৃহস্পতিবার। রবিন, রবিনের মা, চাচা আলামিন,বড় ভাই রুবেল মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন । কিন্তু রবিন এই ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ।
সালিশ বৈঠকে ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জোর করে সাদা কাগজে শরীফার স্বাক্ষর রেখে দিয়েছে ‘।আরও জানা যায় সালিশ বৈঠকে দেলোয়ার হোসেন দোলার জেরার মুখে শরীফা সবাই কে জানায় সোহেল পিতা আজাহার, শান্ত পিতা ইয়াজউদ্দিন, স্বাধীন পিতা ফরহাদ, শাহীন পিতা রিপন , তানজিল পিতা ফরহাদ এরা রবিনের বন্ধু আগে থেকেই ঘটনা জানে কিন্তু প্রকাশ না করতে নানান ভয় দেখিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে শরীফা জানান ‘ গ্রামের মাতব্বররা আমার সঠিক একটা সমাধান দিতে পারলো না , আমার সন্তানের কি পরিচয় হবে? আমার ভবিষ্যত অন্ধকার, এখন আমার মরণ ছাড়া উপায় নাই ‘।
শরীফার পিতা সুরুজ্জামান সঠিক বিচার না পেয়ে বাধ্য হয়ে ০৪/১০/২০২৪ইং শুক্রবার আইনের আশ্রয় নিতে ধনবাড়ী থানায় বাদি হয়ে নারী শিশু নির্যাতন ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করেছেন, (মামলা নং ২ ধনবাড়ী থানা ০৪/১০/২০২৪ ইং)। ধনবাড়ী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ এস এম শহীদুল্লাহ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।