টাঙ্গাইল -৫ সংসদীয় আসনটি সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই সদর উপজেলায় রয়েছে ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ। এটি জাতীয় সংসদের ১৩৪তম আসন।
টাঙ্গাইল সমাচার এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার শুরু করছে। এতে ১৯৯১সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ থেকে ২০২৪ সালের ৭জানুয়ারী অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্যে তিনটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ফলাফল ও এয়োদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ১৯৯১সালের২৭ ফেব্রুয়ারী পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এই আসনে ভোটার ছিলেন ৩লাখ৩৩ হাজার ১শত ৫৫জন। ভোট প্রদান করেন ১লাখ৯২ হাজার ৮শত ৫১ জন।নির্বাচনে জাতীয় পার্টির অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৭৪ হাজার ১শত ৪৪ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭১ হাজার ৪শত ৫৫ ভোট। ১৯৯৬সালের ১২জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩লাখ ৮ হাজার ৪শত ৭৩ জন।ভোট প্রদান করেন ২লাখ ৩৯ হাজার ৯শত ৮১ জন।নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৯৫ হাজার ৯শত ৩ভোট।তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আবুল কাশেম। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৬৯ হাজার ৪শত৩০ভোট। ২০০১সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩লাখ ৯১ হাজার ৫শত ৪৫ জন। ভোট প্রদান করেন ২লাখ ৯৯হাজার ৭শত ৬১জন।নির্বাচনে বিএনপির অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান বিজয়ী হন।
ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৯৬ হাজার ৫শত ৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮৩ হাজার ৪শত ৫৮ ভোট। এয়োদশ সংসদ নির্বাচন কে সামনে রেখে জরিপ টিম টাঙ্গাইল -৫, আসনের ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে দীর্ঘ ২ মাস সরজমিনে জরিপ চালায়। জরিপ টিমের সাথে অংশগ্রহণকারি বেশি ভাগ ভোটার ১৯৯১সালের পঞ্চম ১৯৯৬সালের সপ্তম ২০০১ সালের অষ্টম জরিপ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য সহায়তা মূলক ছিলেন। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, টাঙ্গাইল-৫ সংসদীয় আসনটি একক কোন রাজনৈতিক দলের ঘাঁটি নয়।স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ, পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির ঘাঁটিতে পরিনত হয়। ৫ আগষ্টের পর আওয়ামী লীগের নেতারা পলায়ন করার পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে জেলা জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য আহসান হাবীব টাঙ্গাইল-৫ আসনের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন।
বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা সুদৃঢ় হলেও দলীয় কোন্দল তীব্র ও প্রকট। আগামী নির্বাচনে যার বিরূপ প্রভাব পড়বে, এটা স্পষ্ট। দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসন আমলে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন ও টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল তারা হামলা, মামলা শত নির্যাতনের শিকার হয়েও প্রতিটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালন করে দলকে তারা ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। ৫ আগষ্টের আগে টাঙ্গাইলে আর কোন নেতাকে দৃশ্যমান দেখা যায়নি। ৫ আগষ্টের পর হঠাৎ কেন্দ্রীয় বিএনপি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রচার সম্পাদক টাঙ্গাইল-৫ আসনের নির্বাচনের ঘোষণা দিলে দলীয় কোন্দল তখন থেকে শুরু হয়। এরই মধ্যে বিএনপির সাবেক যুবদল ও ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক সাতিল টাঙ্গাইল-৫ আসনের এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন। যা এখন তীব্র ও প্রকট। তবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের ক্লিন ইমেজ রয়েছে।
টাঙ্গাইলের ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে জরিপ কালে সিংহভাগ স্থানে সদরে ছেলে জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবালের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। টাঙ্গাইল সদর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ জরিপ টিম কে জানান, বিএনপির মনোনয়নের উপর নির্ভর করবে এই আসনের ভবিষ্যত। এছাড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি। প্রায় একই অবস্থা গণঅধিকার পরিষদ গণসংহতি আন্দোলন সহ অন্য ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর।
এয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণ মূলক হলে জাতীয় সংসদের ১৩৪তম সংসদীয় আসন টাঙ্গাইল ৫ আসনে ক্লিন ইমেজের সদরের ছেলের সাথে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।